বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট হলো আমাজন । এই বনে প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ ও পশুপাখি আছে। সেইসঙ্গে ১০ লাখ আদিবাসী সেখানে বসবাস করে।
কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে বড় ভূমিকা রাখছে এ বনাঞ্চল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বেড়ে গেছে। এতে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। যার উদাহরণ আমাজনে বন উজাড় হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে আমাজনে বনভূমি উজাড়ের তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করছে
ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (আইএনপিই)।
আইএনপিই নিশ্চিত করে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে যে, ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত) আমাজনের যে পরিমাণ বন উজাড় হয়েছে, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের পাঁচগুণের সমান।
স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে আইএনপিই বলেছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আমাজনের ৩ হাজার ৯৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার বন উজাড় হয়। আয়তনের দিক থেকে যা নিউইয়র্কের পাঁচ গুণের সমান। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বন উজাড়ের এই পরিমাণ ১০ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে আমাজনের ৩ হাজার ৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার বনভূমি উজাড় হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০১৫ সালের পর থেকে আমাজনে এবারই (চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে) সবচেয়ে বেশি বন উজাড় হয়েছে। শুধু গত জুনেই এই বনের ১ হাজার ১২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা উজাড় হয়, যা চলতি বছর কোনো একক মাসে সবচেয়ে বেশি।
যেসব কারণে উজাড় হচ্ছে আমাজনের বন
ব্রাজিলে বনভূমি ধ্বংস বেড়েছে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর আমলে। আমাজনে বন কেটে চাষাবাদের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। তৎপর রয়েছেন এই অঞ্চলের খনিজ সম্পদ আহরণেও। আমাজন রক্ষায় বলসোনারো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ পরিবেশবাদীদের। তাদের অভিযোগ, তিনি (বলসোনারো) আমাজনের গুরুত্ব ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়গুলো উপেক্ষা করছেন। ভূমিদস্যুদের সুরক্ষা দিচ্ছেন।
বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, গত পাঁচ দশকে আমাজনের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকার বন উজাড় হয়েছে। কৃষিকাজ ও পশুপালনের জন্য স্থানীয়দের অনেকেই বনের গাছ কেটে জমি খালি করছেন। তবে বন উজাড়ের পেছনে ভূমিদস্যু ও বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেন অনেক পরিবেশবাদী।
সূত্র : এনডিটিভি, ওয়াশিংটন পোস্ট, প্রথম আলো