২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘন–সংক্রান্ত এক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরেছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে ৮১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সারা দেশে অন্তত ২৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।তাদের অধিকাংশই গুলিতে আহত হন।
১২টি জাতীয় দৈনিক, এইচআরএসএসের তথ্য অনুসন্ধানী ইউনিট ও সারা দেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদন তুলে ধরেন এইচআরএসএসের গবেষণা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে এইচআরএসএস বলেছে, নিহত ৮১৯ জনের মধ্যে ৬৩০ জনের নাম তারা জানতে পেরেছেন। ১৮৯ জনের নাম জানা যায়নি। ১৬ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ৩১১ জন এবং ৪ আগস্ট থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ৫০৮ জন নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৫০০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৫, খুলনা বিভাগে ৭৬, রাজশাহী বিভাগে ৬১, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৯, রংপুর বিভাগে ২৫, সিলেট বিভাগে ২০ এবং বরিশাল বিভাগে ১৩ জন মারা গেছেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৪৬ জনের মৃত্যুর ধরন বিশ্লেষণ করতে পেরেছে এইচআরএসএস। তাতে দেখা গেছে, ৪৫৫ জন গুলিতে, ৭৯ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে, ৭৮ জন পিটুনিতে ও ১০ জন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এবং অন্যান্য কারণে ২৪ জন মারা গেছেন।
৪৩৫ নিহত ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করে এইচআরএসএস বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৩৭৫ জন, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের হাতে ৩৫ জন এবং গণপিটুনিতে ২৫ জন মারা গেছেন।
নিহত ব্যক্তিদের বয়সও বিশ্লেষণ করেছে সংস্থাটি। নিহত ৪৭০ ব্যক্তির বয়স বিশ্লেষণ করে এইচআরএসএস বলেছে, এর মধ্যে শিশু (১৮ বছরের কমবয়সী) ৮৩ জন (১৮%), তরুণ ও যুবক ২৪০ জন (৫১%), মধ্যবয়সী ১২৬ জন (২৭%) এবং বয়স্ক ব্যক্তি ২১ জন (৪.৫%)।
আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের পেশাও খোঁজা হয়েছে প্রতিবেদনে। ২৯৩ জনের পেশা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মধ্যে ১৪৪ জন শিক্ষার্থী, ৫৭ জন শ্রমজীবী, ৫১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ৫ জন সাংবাদিক এবং ৩৫ জন অন্যান্য পেশার মানুষ।
সূত্র : প্রথম আলো